হৃদরোগের জন্য অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা
অজুন গাছের ছাল খাওয়ার নিয়ম
আমরা সকলেই কমবেশি অর্জুন গাছ চিনি থাকি। অর্জুন গাছ দেখতে পেয়ারা গাছের মতো কিন্তু অর্জুন গাছের পাতা পেয়ারা গাছের চেয়ে বড় বড় । অর্জুন গাছের ছাল আয়ুর্বেদিক ঔষুধের সাথে ভেষজ ওষুধ হিসাবে কাজ করে। অর্জুন গাছের ছালে রয়েছে কার্ডেনোলাইড, ট্যানিন ,ফ্ল্যাভোনয়েড, ট্রাইটারপেনয়েড স্যাপোনিন, এলাজিক অ্যাসিড এবং গ্যালিক অ্যাসিডের মতো জৈব সক্রিয় যৌগ রয়েছে যা আশ্চর্যজনক নিরাময় বৈশিষ্ট্য সরবরাহ করে ।
আরো পড়ুনঃড্রাগন ফলের উপকারিতা
আমাদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ সারাতে অর্জুন গাছের ছাল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা অর্জুনের ছাল বিভিন্ন রোগের ঔষধ হিসেবে ব্যবহার করা হয়। আমরা সকলেই অর্জুন গাছের গুনাগুন সম্পর্কের কম বেশি জানি। অর্জুন গাছকে বলা হয় টার্মিনালিয়া। তিনটি ভিন্ন ধরনের টার্মিনালিয়া প্রজাতির ঔষধে নিযুক্ত করা হয় বিশেষ করে আয়ুর্বেদিক অনুশীলনে ।Terminalia bellirica,Terminalia arjuna,এবং Terminalia chebula এই প্রজাতিগুলি।
অর্জুন গাছের ছালে রয়েছে একাধিক চিকিৎসার বৈশিষ্ট্য যেমন অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট , এন্টিমাইক্রোবিয়ার,ইনফ্লেমেটরি। অর্জুন গাছের ছাল হৃৎপিন্ডের জন্য অনেক উপকারী। তাছাড়া অর্জুন গাছের ছাল বেশি শক্তিশালী করে। অর্জুন গাছের ছাল খেলে উচ্চ রক্তচাপ হ্রাস করে এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সহায়তা করে। তাছাড়া বিভিন্ন ধরনের হাড়ের রোগ সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের জন্য অর্জুন গাছের ছাল সকালবেলা ভিজিয়ে খেলে ভালো সুফল পাওয়া যায় ।
আবার যাদের হার্ট সংক্রান্ত সমস্যা রয়েছে তারা প্রতিদিন সকালে অর্জুন গাছের ছাল দুধের সাথে সিদ্ধ করে খেলে উপকার পাবে ইনশাআল্লাহ। অর্জুন গাছের ছালে রয়েছে অনেক পুষ্টি উপাদান সেগুলো হলোঃ ফাইটোকেমিক্যাল , ট্রাইটারপেনয়েড, গ্লাইকোসাইড, ফ্ল্যাভোনয়েড, ট্যানিন, বিটা-সিটোস্টেরল, খনিজ এবং ট্রেস উপাদান রয়েছে। ক্যাটাগরি ফাইটোকেমিক্যালস, ট্রাইটারপেনয়েডস আরজুনিন, আর্জুনিক অ্যাসিড, আরজুনোলিক অ্যাসিড, আরজুনজেনিন, টার্মিনিক অ্যাসিড, খনিজ, ক্যালসিয়াম, অ্যালুমিনিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, সিলিকা, দস্তা, তামা উপাদান।
অর্জুন গাছের ছালের গুঁড়ো ২-৩ গ্রাম চিকিৎসক এর পরামর্শ নিয়ে গ্রহণ করতে হবে মধু বা পানির সাথে মিশিয়ে দুপুরে খাওয়ার পরে এবং রাত্রে খাওয়ার পরে খেতে হবে তাছাড়া আপনি চাইলে অর্জুন গাছের ছাল দিয়ে চা বানিয়ে খেতে পারেন যা আপনার স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী।
অর্জুন গাছের ছাল কিভাবে খেতে হয়
প্রিয় পাঠক আপনারা যারা জানতে চাচ্ছেন যে অর্জুন গাছের ছাল কিভাবে খেতে হয় তাদের জন্য আজকের আর্টিকেলটি। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনারা জানতে পারবেন অর্জুন গাছের ছাল কিভাবে খেতে হয় সে বিষয়ে। বিস্তারিত জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। অর্জুন গাছের ছাল পানিতে ভিজিয়ে রোজ সকালে খালি পেটে খেলে শ্বাসকষ্টের জন্য খুব উপকার হয়। অর্জুন গাছের ছাল যদি কেউ নিয়মিত খাই তাহলে তার রক্তের চাপ নিয়ন্ত্রণে থাকে এবং বুকের ধরপারনি নিয়ন্ত্রণ রাখতে কাজ করে । হার্টের শক্তি বৃদ্ধি করে ধমনীর শিরা গুলিকে পরিষ্কার রাখতে সাহায্য করে ফলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি থেকে বাঁচতে সাহায্য করে।
আরো পড়ুনঃশরীর দুর্বল হলে কি ভিটামিন খেতে হবে
অর্জুন চা এর উপকারিতা
- অর্জুন চা হৃদরোগের জন্য ফলদায়ক
- রক্তনদীর জমে থাকা চর্বি বা রক্ত লিপিড অপসরণে অত্যন্ত কার্যকরী।
- স্ট্রোক ও হার্ট এ্যাটাক প্রতিরোধে সাহায্য করে।
- অর্জন চেয়ে রয়েছে অ্যাজমা প্রতিরোধের উপাদান।
- তাছাড়াও আরো অনেক গুণাগুণ রয়েছে যেগুলো বলে শেষ করা যাবে না সেজন্য নিয়মিত অর্জন চা খাওয়া আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
অর্জুন পাতার উপকারিতা
প্রিয় পাঠক অর্জুন গাছের পাতা উপকারিতা কম কিন্তু অর্জুন গাছের ছালের উপকারিতা অনেক বেশি। অর্জন গাছের পাতা কেউ যদি নিয়মিত খায় তাহলে তার আমাশয় রোগ ভালো হয়ে যাবে।
অর্জুন পাউডার খাওয়ার নিয়ম
এক চা চামচ অর্জুন পাউডার পানিতে ভিজিয়ে কিছুক্ষণ পর খাওয়া যায়। বাড়িতে একটি অর্জুন গাছ থাকা মানে একজন ডাক্তার বাড়িতে থাকা। অর্জুন গাছ রয়েছে নানা বিধি রোগের ঔষধি গুনাগুন। অর্জুন পাউডারের রয়েছে অনেক গুণাগুণ নিচে শেষ হল গুনাগুন সম্পর্কে আলোচনা করা হলো।
- হার্টের সমস্যার কার্যকারী ভূমিকা রাখে।
- মাংসপেশি শক্তিশালী করে।
- হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টের জন্য বিশেষ কার্যকরী। দুধের সাথে অর্জুন পাউডার মিশিয়ে খেলে বুকের ধড়ফড় কমে যায় কমে যায়।
- অর্জুন গাছের পাতা আমাশয় রোগের জন্য উপকারী।
- অর্জুন পাউডার মধুর সাথে মিশিয়ে মুখে মাখলে মুখের ব্রণ ও মেছাতায় দিলে ভালো ফলাফল পাওয়া যায়।
- মুখে ও মাড়িতে বিভিন্ন প্রকার ক্ষত সারাতে এবং হজম শক্তি বৃদ্ধিতে অর্জুন পাউডার অনেক কার্যকরী ।
- ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণের সহায়তা করে
অর্জুন গাছের ছালের রসের উপকারিতা
অর্জুনের গাছের ছালের রসের উপকারিতা অনেক। কেউ যদি রোজ সকালে অর্জুন গাছের ছালের রস দুধের সাথে মিশিয়ে খালি পেটে খায় তাহলে তার নিম্ন রক্তচাপ থাকলে অর্জুন গাছের ছালের রস সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়। রক্তক্ষরণে ৫ থেকে ৬ গ্রাম অর্জুন গাছের ছাল রাতে ভিজিয়ে সকালে পানি থেকে খেলে আরোগ্য লাভ হয়। তাছাড়াও আরো অনেক রোগের জন্য অর্জুন গাছের ছাল অনেক গুরুত্বপূর্ণ । বিভিন্ন প্রকার রোগ থেকে মুক্তি পেতে অর্জুন গাছের চাল নিয়মিত খাওয়া খুবই জরুরী।
অর্জুনের ছালের উপকারিতা
অর্জুন গাছের অনেক উপকারিতা রয়েছে। ডায়রিয়া বা পেটে অন্য কোন সমস্যা দেখা দিলে অর্জুন গাছের ছাল খেলে হজম শক্তি বৃদ্ধি পায় ও ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। মুখ জিব্বা ও মাড়ির প্রদাহে অর্জুনের স্থান এইসব রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়। যদি কোনো কারণে মাড়ি থেকে রক্তপাত হয় তাহলে মাড়ির রক্তপাত বন্ধ করে।
আরো পড়ুনঃকোন গাছের শিকড় খেলে বীর্য গাঢ় হয়
তাছাড়াও আরো অনেক ওষুধ গুনাগুন রয়েছে ইদানিং অর্জুন গাছের ছাল থেকে অর্জুন চা তৈরি হচ্ছে যা হৃদরোগের জন্য অনেক কার্যকরী। অর্জুন গাছের ছালের পাউডার যদি পানিতে ফুটিয়ে মধু অথবা আখের গুড় মিশেয়ে চা পান করলে হার্ট সুস্থ ও সবল হয়। যার ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা
সকল কিছুর উপকারিতার পাশাপাশি অপকারিত রয়েছে। ঠিক একই ভাবে অর্জুন গাছের ছালে অপকারিতা রয়েছে।অর্জুন গাছের ছালে অনেক উপকারিতা রয়েছে। কিন্তু তারপরেও কিছু অর্জুন গাছের ছালের অপকারিতা রয়েছে নিচের সেই সকল অপকারিতার কথা উল্লেখ করা হলো।
- অর্জুন গাছের ছাল ভরা পেটে খেলে পেট ব্যথা হয়।
- অর্জুন গাছের ছাল গর্ভবতী মহিলাদের জন্য ক্ষতিকর তাই তাদের সাল ব্যবহারের পূর্বে সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
- ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য অর্জুন গাছের ছাল যথেষ্ট ব্যবহার করা উচিত।
- একজন চিকিৎসকের পরামর্শ মতোই অর্জুন গাছের ছাল যতটা সম্ভব ব্যবহার করা উচিত ।
তৌহিদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url