বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের এলার্জির ওষুধ

বাচ্চাদের এলার্জি হওয়ার মূল কারণ হলো পিতা অথবা মাতা কারো একজনের যদি শরীরে এলার্জি থেকে থাকে তাহলে তাদের সন্তানদেরও এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা। আজকের আর্টিকেলে আমরা আলোচনা করব বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের এলার্জির ওষুধ সম্পর্কে।

children

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের এলার্জির ওষুধ সম্পর্কে জানতে আজকের আর্টিকেলটি মনোযোগ সহকারে করুন। আজকের আর্টিকেলটি পড়লে আপনি জানতে পারবেন আপনার বাচ্চার এলার্জি হলে বাচ্চাদের অ্যালার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের এলার্জির ওষুধ সম্পর্ক

পোস্ট সূচিপত্রঃবাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের এলার্জির ওষুধ

আজকের পোস্ট সূচিপত্র তে আমি উল্লেখ করেছি বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের অ্যালার্জির ঔষধ সম্পর্কে কিছু টিপস। পোস্ট সূচিপত্রতে উল্লেখিত বিষয়গুলো নিচে সুন্দরভাবে আলোচনা করা হবে।

এলার্জি কি

মানুষের শরীরে এক প্রকার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা বা হিউম্যানিটি সিস্টেম আছে। এই হোম মিনিটে সিস্টেমগুলো কম দেখা দিলে এলার্জির বহিঃপ্রকাশ ঘটে। আমাদের শরীরে কখনো কখনো ক্ষতিকর নয় এমন অনেক ধরনের বস্তুকে আমরা ক্ষতিকর ভেবে প্রতিরোধ করার চেষ্টা করি এমন বস্তুর প্রতি শরীরের যে অস্বাভাবিক প্রতিক্রিয়া তাই হচ্ছে অ্যালার্জি। আমাদের দেশের অসংখ্য মানুষের এলার্জি এক অসহনীয় রোগ। এলার্জির কারণে হাঁচি থেকে শুরু করে খাদ্য বা ওষুধের ওপর ভীষণ প্রতীকে এমনি কি শ্বাসকষ্টের মতো রোগ ও হতে পারে।

কারো কারো ক্ষেত্রে এলার্জি সামান্য সমস্যা হলেও আবার অনেকেরই মারাত্মক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় এই এলার্জির কারনে। যে সকল কারণে এলার্জিগুলোর প্রকাশ পাই। সেগুলো হলঃ ঘরের ধুলাবালি , গরুর মাংস , ফুলের ঘ্রাণ , চিংড়ি , ইলিশ মাছ গরুর দুধে , আমাদের শরীরে ব্যাপক চুলকানি শুরু হয় অথবা লাল লাল চাকা চাকা হয়ে ফুলে যায়। এমন ধরনের চাকা চাকা ফুলে ওঠা দেখলে আপনি বুঝবেন আপনার

বাচ্চাদের এলার্জি কেন হয়

যদিও এলার্জি একটি বহুল প্রচলিত শব্দ কিন্তু এলার্জি সম্পর্কে আমাদের অনেকেরই সঠিক কোন ধারনা নেই। আজকের আর্টিকেলে আমি আলোচনা করব বাচ্চাদের অ্যালার্জি কেন হয় এ বিষয়ে। বাচ্চাদের অ্যালার্জি কেন হয় এ বিষয়ে জানতে আজকের কি মনোযোগ সহকারে পড়ুন। শ্বাসকষ্ট , একজিমা , ইত্যাদি বহু চর্ম রোগের কারণ এলার্জি। সাধারণত বেশিরভাগ বাচ্চাদের মধ্যে এলার্জির প্রবণতা দেখা দেয়। শিশুদের মধ্যে সাধারণত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তুলনামূলক কম থাকে।

বিশেষ করে বাচ্চারা যদি প্রায় রোগে ভুগতে থাকে তাহলে তাদের মধ্যে রোগ জীবাণু প্রতিরোধ করার ক্ষমতা অনেকটাই কমে যায় সে ক্ষেত্রে তাদের এলার্জি হতে পারে। তাছাড়া বাচ্চাদের মধ্যে সাধারণত দুই ধরনের এলার্জি দেখা দেয় বংশগত আর ঋতুগত । অনেক বাচ্চাদের আছে যাদের পিতা অথবা মাতার এলার্জি আছে সে কারণেই তার সন্তানেরও এলার্জি হতে পারে। আর ঋতুগত এলার্জি হল পরিবর্তনের সাথে সাথে বাচ্চাদের মধ্যে নানা রকম পরিবর্তন দেখা দেয় এলার্জির কারণে বাচ্চাদের সর্দি ,কাশি সহ নানা রকমের সমস্যা হতে পারে।

একটি গবেষণায় দেখা গেছে , যে এলার্জির সঙ্গে বাচ্চাদের খাদ্য অভ্যাস ও যোগ রয়েছে। বাচ্চাদের ছোটকালে এমন অনেক খাবার খাওয়ানো হয় যেগুলো খেলে বাচ্চাদের অ্যালার্জি হয়। বাচ্চাদের ছয় মাস পর্যন্ত মায়ের দুধ খাওয়ানোর জন্য উপদেশ দেন ডক্টররা কিন্তু মায়েরা বুকের দুধ না খাইয়ে প্যাকেটজাতক বিভিন্ন খাবার খাওয়ানোর ফলে বাচ্চাদের অ্যালার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। বাচ্চাদের ত্বক খুব নমনীয়। বাইরের পলিউশন ও ধুলাবালি সংস্পর্শে এলে অনেক সময় বাচ্চাদের এলার্জির সংক্রমণ ঘটতে থাকে।

বাচ্চাদের বাহিরে নিয়ে যাওয়ার সময় ধুলোবালি এবং পলিউশন থেকে দূরে থাকুন এবং বাহিরে থেকে আসার পরে বাচ্চাকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে দিন না হলে আপনার বাচ্চার এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আমরা এতক্ষন আলোচনা করলাম বাচ্চাদের এলার্জি কেন হয় এ বিষয়ে আশা করছি আর্টিকেলটি পড়ে আপনারা উপকৃত হবেন।

বাচ্চাদের এলার্জি হলে কি করতে হবে

সাধারণত আমরা কোন খাবার গ্রহণের পর সেই খাবারের কোন নির্দিষ্ট পদার্থ আমাদের শরীরে বিরূপ প্রতিকার তৈরি করে তখন তাকে আমরা অ্যালার্জি বলে থাকি। শিশুদের শরীরের ত্বক অনেক নরম এবং সেন্সিটিভ। শিশুদের শরীরে এলার্জি হলে তাদের শরীরে লাল লাল দাগ এবং গুটিগুটি হয়ে যায়। বাচ্চাদের এলার্জি হলে আপনি কিভাবে বুঝবেন যে এলাচ হয়েছে আপনার বাচ্চাকে কোন খাবার খাচ্ছেন যে খাবার খাওয়ানোর ফলে সে নাক চুলকাচ্ছে হাচিঁ হচ্ছে কিংবা সর্দি লাগছে তাহলে বুঝবেন যে আপনার বাচ্চার এলার্জি হয়েছে।

যে সকল খাবারগুলোতে এলার্জি আছে সে সকল খাবার বাচ্চাকে খাওয়ানো যাবে না। যেমন গরুর দুধ, মাছ , মাংস, এ সকল খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তাছাড়া অনেক মায়েরা আছেন যাদের শিশুদের ত্বকে বিভিন্ন রকমের লোশন বা ক্রিম ব্যবহার করে থাকেন । ওই সকল ক্রিমগুলোর অনেকগুলোর মধ্যে আছে যেগুলো বাচ্চার জন্য এলার্জি এর কারণ হতে পারে। শিশুদের শরীরে সরিষার তেল মাখানো উচিত নয় কারণ সরিষার তেলে এলার্জি হতে পারে। আপনি যদি আপনার বাচ্চার শরীরে তেল ব্যবহার করতে চান তাহলে অবশ্যই অলিভ অয়েল ব্যবহার করতে পারবেন।

এলার্জির ঔষধ বেশি খেলে কি হয়

এলার্জির ঔষধ বেশি দিন খেলে কি হয় এই প্রশ্নটি অনেকেই করে থাকেন। এলার্জি হচ্ছে হিউম্যানিটি সিস্টেমের একটা দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যা পরিবেশের কোন এলার্জেনের কারণে শরীরের হাইপারসেনসিভিটি দেখা দেয়। এমনও অনেক ওষুধ রয়েছে যেগুলো দীর্ঘদিন খাওয়ার ফলে শরীরে উপকারের চেয়ে ক্ষতির পরিমাণ বেশি হয়। যে সকল ঔষধ এলার্জির জন্য ব্যবহার করা হয় সেগুলো হল এন্টিহিস্টা্মাইন, ইনহিবিটারস, এলার্জেন ইমিউনো থেরাপি, এপিনেফ্রিন শট ইত্যাদি।

আমরা অনেকেই রয়েছি ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অনেক ঔষধ ব্যবহার করে থাকি এলার্জির জন্য যেগুলো আমাদের শরীরের জন্য অনেক ক্ষতিকারক। এলার্জির ঔষধ খেলে আমাদের শরীরের যে সকল সমস্যাগুলো হয় সেগুলো হলঃ ঘুমের ভাব হয়, শারীরিক দুর্বলতা, মেজাজ খিটখিটে ছাড়াও নানান রকমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। এলার্জির ঔষধ বেশি খাওয়ার জন্য আপনার বমি বমি ভাব, মাথা ঘোরা ত্বকে বিরূপ প্রতিক্রিয়া , ডায়রিয়া ,জ্বর হতে পারে সেজন্য এলার্জি হলে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কখনোই ঔষধ গ্রহণ করা ঠিক নয়।

বাচ্চাদের এলার্জির ক্রিম

বাচ্চাদের এলার্জি হলে কোন ধরনের প্রেসক্রিপশন দেয়া হয়ে থাকে তা একজন রেস্টার্ট স্কিন বিশেষজ্ঞ এবং শিশু স্কিন রোগে অভিজ্ঞ একজন ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন  আমি আজ আপনাদের দেখাবো। ভিটামিনসন-এন , এই ক্রিমটি শিশু শরীরে দিনে দুইবার ব্যবহার করতে পারবেন শুধু মুখে বাদে। এফান ক্রিম, এই ক্রিমটি শরীর বাদে শুধু মুখে ব্যবহার করতে পারবেন দিনে দুইবার এক মাস ব্যবহার করতে হবে এছাড়া আপনি আপনার বাচ্চার এলার্জির জন্য আরেকটি সিরাপ আছে যেটা খাইতে পারেন।

সেটা হল আরটিকা এই সিরাপিটি নয় মাস বয়সী বাচ্চাদের খাওয়াতে পারবেন। এছাড়াও লরিক্স ক্রিম এই ক্রিমটি পরিবারের সকলকে ব্যবহার করতে হবে কারণ অন্যদের এলার্জি থেকে বাচ্চাদের অ্যালার্জি হতে পারে সেজন্য সকলকে একসাথে ব্যবহার করতে হবে। বাচ্চাদের শরীরে যদি এলার্জি দেখা দেয় তাহলে অবশ্যই দেরি না করে ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহণ করুন এবং সে অনুযায়ী ডাক্তার যে সকল ক্রিম গুলো দেবে সেগুলো ব্যবহার করলে বাচ্চাদের এলার্জি ভালো হয়ে যাবে।

বাচ্চাদের এলার্জি ঔষধ এর নাম

এখন আলোচনা করবো বাচ্চাদের এলার্জির ঔষধে নাম নিয়ে। বাচ্চাদের অ্যালার্জি হলে অনেক রকমের ঔষধ দেয়া হয় আজকে সেই ঔষধ গুলোর নাম আমি আপনাদের বলব। আপনার বাচ্চা যদি এলার্জি হয়ে থাকে তাহলে আপনি যদি এ সকল ওষুধগুলো আপনার বাচ্চাকে খাওয়ান তাহলে খুব জোর তো আপনার বাচ্চার এলার্জি ভালো হয়ে যাবে । Claritine এবং Zyrtec একটি সিরাপ,chewable ট্যাবলেট ।

এই ট্যাবলেটটি দুই বছরের বাচ্চাদের জন্য খাওয়াতে পারবেন। চার বছরের বাচ্চাদের জন্য singulair সিরাপ এবংchewable ট্যাবলেট খাওয়াতে পারবেন।দুই মাস থেকে ১১ মাস বয়সী বাচ্চাদের জন্য অ্যালিগ্রা একটি তরল আকারের ঔষধ। এছাড়া আপনারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বাচ্চাদের এলার্জির জন্য বিভিন্ন রকমের ওষুধ লিখে থাকেন সেগুলো সেবন করাতে পারেন তার ফলে আপনার বাচ্চার এলার্জি ভালো হয়ে যাবে ইনশাল্লাহ।

বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় 

বিভিন্ন কারণে বাচ্চাদের অ্যালার্জি হতে পারে। বিভিন্ন সময়ে খাবারের জিনিস থেকে বাচ্চাদের এলার্জি দেখা যায়। অনেকে রয়েছেন যারা মনে করেন যে বেগুন, চিংড়ি , ডিম , দুধ , এগুলো খেলে এলার্জি হয় তারা সাথে সাথে এগুলো খাওয়া বাদ যায় কিন্তু এগুলো খাওয়া বাদ দিয়ে ওষুধ খাওয়ার পরে এলার্জির সাময়িক সময়ের জন্য ভালো হয়ে যায় কিন্তু একবারে সেরে যায় না।

সাধারণত খাবার থেকে এলার্জি হলে পেট ব্যাথা হয়। অনেক সময় ছোট বাচ্চাদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট হতে পারে। শিশুদের গরুর দুধ ভাব প্যাকেটজাতক দুধ খাওয়া থেকে বিরত রাখুন কারণ এ থেকে এলার্জি হতে পারে। পোকামাকড় থেকে এলার্জি ছড়ায় সেজন্য সব সময় বাড়ির আশপাশ পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। 
ধুলাবালি এবং পোষা পানি যেমন কুকুর বিড়াল থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখতে হবে। বাচ্চাদের শরীরে গুটি গুটি দেখা দিলে ডাক্তার চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে। আর সব সময় বাচ্চাদের পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে এবং খেয়াল রাখতে হবে যে খাবারগুলোতে বাচ্চার এলার্জি সে খাবার গুলো বাচ্চার কিনা খাওয়ানোর জন্য চেষ্টা করতে হবে।

লেখকের শেষ কথাঃবাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় - বাচ্চাদের এলার্জির ওষুধ

আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের জানানোর চেষ্টা করেছি বাচ্চাদের এলার্জি দূর করার ঘরোয়া উপায় এবং বাচ্চাদের এ এলার্জির ঔষধ সম্পর্কে । আজকের আর্টিকেল পরে যদি আপনারা উপকৃত হন তাহলেই আমাদের সার্থকতা। আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আমাদের কমেন্ট করে জানাবেন এবং আপনার বন্ধুদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না কারণ তার বাচ্চাদেরও এলার্জি হতে পারে।



এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

তৌহিদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url