কুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত
প্রিয় পাঠক আসসালামুআলাইকুম আজকের এই পোষ্টটিটে আমরা আলোচনা করবো কুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে।আজকের পোস্টি যদি আপনি মনোযোগ দিয়ে পড়েন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে।সঠিক দেওয়ার জন্য কুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে জানা প্রয়জন ।
তাহলে চলুন যেনে নেওয়া যাক কুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে।আজকের পোস্টি কুরবানী দেওয়ার জন্য আপাদের আনেক সাহয্য করবে ।
পোস্ট সূচিপত্র ঃকুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত
- কুরবানি কী?
- কুরবানীর ইতিহাস ও শিক্ষা
- কোরবানি দেওয়ার নিয়ম
- কুরবানী কার উপর ওয়াজিব
- কুরবানি কি ফরজ
- কোরবানি কাদের ওপর ফরজ?
- কুরবানী সম্পর্কে হাদিস
- কোরবানি ঈদ কত তারিখে ২০২৩
- কুরবানির ফজিলত
- কুরবানীর মাসায়েল
- শেষ কথা
কুরবানি কী
কুরবানি উর্দতে ব্যাবহার করা ত্যাগের অর্থে ,কুরবানি মানে ত্যাগ করা । পশু কুরবানিকে কুবানি করা হয় মূলত আল্লাহর তালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কুরবানি করা ।কুরবানি হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর ত্যাগের স্বাক্ষর পশু কোরবানি। তাছাড়াও হযরত আদম আলাই সাল্লাম দুই ছেলে ভাবিল এবং কাবিল আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জনের জন্যই পুশু কুরবানি করে ।কুরনাবি মানে আল্লাহ তালার সন্তুষ্টি অর্জন করা আল্লাহ নৈকট্য লাভের মাধ্যম ।
আরবি মাসের জিলহজ মাসের ১০ তারিখে অর্থাৎ বাকি যেদিন গুলোতে কুরবানি করা যাই সেই দিন অনুমদিত যে কোন পশু আল্লাহ তাল্লার সন্তুষ্টি অর্জন এর জন্য জবাহ করা হয় তাকে কুরবানি বলে। সর্বপ্রথম কুরআনে কুরবানির প্রচিন ইতিহাস সম্পর্কে জানা যাই এইটা হাবিল ও কাবিলের কুরবানির ইতিহাস । তারা কুরবানি করেছিলো আল্লাহতালাকে সন্তুষ্টি করে তাদের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য
হজের তিনদিন পর
কুরবানী হলো মুসলমানদের এমন একটি এবাদত যার প্রতি বছর অর্থশালী মানুষের ওপর ওযাজিব করা হয়েছে একটি নির্দিষ্ট সময়ে । কুরআনে কুরবানীর ইতিহাস অতি প্রাচীর। হযরত আদম আলাই সাল্লাম এর সময়ে তার দুই পুত্র হাবিল এবং কাবিল আল্লাহ তায়ালার কাছে কুরবানী পেশ করেন । কুরআনের এক আয়াতে আল্লাহ তা'আলা বলেন " আদমের দুই পুত্র হাবিল এবং কাবিল এর জীবনের বৃত্তান্ত যথাসময়ে শুনিয়ে দাও যখন তারা উভয়ে কোরবানি করেছিল তখন তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাইয়ের কুরবানী কবুল হয়েছিল এবং এক ভাইয়ের কুরবানী কবুল হয়েছিল না।
তাদের দুই ভাইয়ের মধ্যে এক ভাই বলল আমি তোমাকে নিশ্চয়ই হত্যা করব অপরজন বল আল্লাহ তো অবশ্যই সংযোমীদের সাথে থাকেন "(সুরা মায়েদা: আয়াত ২৭) অন্য একটা আয়াতে আল্লাহ তায়ালা বলেন তোমাদের মধ্যে প্রত্যেক জাতির মধ্যেই কুরবানীর বিধান ছিল " আল্লাহ তা'আলা বলেন আমি তোমাদের প্রত্যেক সম্পদের মধ্যে কুরবানীর বিধান দিয়েছি, আল্লাহ তায়ালা বলেন আমি তোমাদের যে সকল জিনিস দিয়েছি সকল জিনিসের উপর যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে ।
আল্লাহ তায়ালাই একমাত্র অবশ্যই তিনি ছাড়া কোন ইলাহা নয়। সুতরাং তোমরা তার কাছেই আত্মসমর্পন করো। আর সুসংবাদ দাও তাদের যারা ঈমানদারগণ যাদের হৃদয়ে আল্লাহর ভয় কম্পিত হয়, এবং যাদের বিপদে আপদে ধৈর্য ধারণ করে নামাজ কায়েম করে এবং আমি তাদের যে রুজি দিয়েছি তা থেকেই তারা ব্যয় করে" ।
আল্লাহ তাআলা হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম কে কুরবানীর আদর্শ হওয়ার ব্যাপারে বলেন" হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম এর সবচেয়ে আদরের ও ভালোবাসার পাত্র ছিলেন তার ছেলে একদিন তিনি স্বপ্নে দেখেন তিনি তার প্রিয় পুত্র হযরত ইসমাইল আলাই সাল্লাম কে কুরবানী করছেন। তখন ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম তার সন্তানের সাথে কথা বললেন তখন হযরত ইব্রাহীম আলাইহিস সালাম তার ছেলেকে জিজ্ঞেস করলেন এ বিষয়ে তোমার অভিমত আল্লাহ তায়ালা যদি আপনাকে আদেশ করে থাকেন এবং আপনি যদি স্বপ্নে দেখে থাকেন আপনি তা পালন করুন।
ইনশাআল্লাহ, আপনি আমাকে ধৈর্যশীল হিসেবেই পাবেন । তারপরে হযরত ইসমাইলআলাই সাল্লাম কে কুরবানী করার জন্য হযরত ইব্রাহিম আলাই সালাম নিয়ে যায় এবং কুরবানী করার জন্য তার গলায় ছুড়ি চালায় এবং আল্লাহর উসিলায় ইসমাইলের জায়গায় একটি দুম্বা কুরবানী হয়ে যায় এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন হয়ে যায় ।
এবং আল্লাহ তা'আলা ইব্রাহিমকে পরীক্ষা করেন এবং ইব্রাহিম পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়। আর এই বিষয়টি স্মরণ করে রাখার জন্য প্রতি বছর জিলহজ্জ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ পর্যন্ত কুরবানী করা হয় । আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টি অর্জন এবং আল্লাহর কাছাকাছি যাওয়ার জন্য জিলহজ মাসের ১০ তারিখে কোরবানি করা হয় ঈদুল আযহার দিনে অর্থাৎ পশুকে যাওয়া করে আল্লাহ তায়ালার জন্য উৎসর্গ করা হয়।
কুরবানী সম্পর্কে কিছু সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা রয়েছে সেগুলো নিচে আলোচনা করা হলো ঃ তোমরা হজ্জ এবং উমরা আল্লাহ তায়ালার জন্য পালন করো এরপরে তোমরা যদি আটকে পড়ো তাহলে তোমরা যে পশু সহজ হবে সেই পশু কোরবানি করো । আর তোমরা তোমাদের মাথা মুন্ডন করো না ততক্ষণ যতক্ষণ না পশু তার যথেষ্ট পৌঁছে । আর তোমাদের মধ্যে কেউ যদি অসুস্থ থাকে তাহলে তার মাথা মন্ডল অন করো না হলে তার তার জন্য সদকা কর অথবা পশু জবেহ করার এর মাঝে ফিদায় দিবে ।
আর যখন তোমরা নিরাপদ হবে তখন যে ব্যক্তি ওমরার পর হজ সম্পাদন পূর্বক তামাত্তু করবে সে যেন যে পশুর সহজ হয় তা জবাহ করে কিন্তু যে পাবে না তাকে হজের তিনদিন এবং যখন তোমরা ফিরে যাবে তখন সাত দিন রোজা পালন করবে এ হলো পুণ্য দশ দিন। এই বিধান তার জন্য, যার পরিবার মসজিদুল হারামের অধিবাস নয়। আর তোমরাও অবশ্যই আল্লাহকে ভয় করো , আর নিশ্চয়ই তিনি শাস্তি দানের কঠোর ।(সূরা বাকারাঃ আয়াত ১৯৬)
"বলুন নিশ্চয়ই আমার নামাজ আমার কোরবানি আমার জীবন ও আমার মৃত্যু আল্লাহর জন্যই যিনি আমাদের সৃষ্টি করেছেন এবং সবকিছুর স্রষ্টা । তার কোন শরীক নেই এবং আমাকে এই নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে । আর আমি মুসলমানদের মধ্যে প্রথম (সূরা আনআমঃআয়াত ১৬২-১৬৩)"
কোরবানি দেওয়ার নিয়ম
প্রতিবছর কোরবানি দেওয়ার সময় হচ্ছে জিলহজ মাসের ১০ তারিখ থেকে ১২ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত অর্থাৎ দুই দিন তিন রাত । উট , গরু , ছাগল , ভেড়া , দুম্বা কুরবানী করলে নফল হিসেবে একভাগ নবী করিম সাঃ এর জন্য দেওয়া উত্তম । কুরবানীর পশুর বয়স, ছাগল কমপক্ষে এক বছর হতে হবে গরু দুই বছর উটের বয়স হতে হবে পাঁচ বছর। কুরবানী দেওয়ার জন্য সুস্থ সবল ও নিখুঁত পশুর বাছাই করা উত্তম । যেসব পশু অন্ধ , খোঁড়া , এবং ব্যবহার করার স্থানে যেতে অক্ষম লেজকাটা সিং ভাঙ্গা কানকাটা দুর্বল এসব পশু কুরবানী উপযুক্ত নয় ।
কুরবানির মাংসঃতিন ভাগে ভাগ করা হয় গরিব ইয়াতিম মিসকিনদের দান করা হয়।একভাগ আত্মীয়স্বজনকে দেয়া হয় আর এক ভাগ নিজের জন্য রাখা মুস্তাহাব । তবে ইচ্ছে করলে আপনি পুরো মাংস খেতে পারেন এতে দোষের কিছু হবে না। কুরবানী এবং প্রস্তুতকারী কোরবানি পশুর মাংস থেকে পরিশ্রমিক স্বরূপ দেওয়া যাবে না ।
কোরবানি পশুর চামড়াঃ কুরবানীর পশুর চামড়া আপনি আপনার নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন না কোরআনে পশুর চামড়া বিক্রি করে কোন এতিম দুঃখী মানুষের মধ্যে টাকা বিতরণ করে দিতে হবে কোরবানি পশুর চামড়ার টাকা আপনি আপনার নিজের জন্য ব্যবহার করতে পারবেন
মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে কুরবানীঃ যদি কোন ব্যক্তি মারা যায় তাহলে ওই ব্যক্তির পক্ষ থেকে তার কোন ছেলে সন্তান অথবা আত্মীয়-স্বজন যদি কোরবানি দেয় তাহলে কুরবানী হয়ে যাবে । আর কুরবানীর মাংস উত্তম নিয়মে বন্টন করতে হবে ।
কুরবানী পশু জবাহ করার নিয়মঃ কুরবানী পশুর জবহ করার নিয়ম জানা থাকলে তিনি আপনার কুরবানীর পশু নিজ হাতে ব্যবহার করতে পারবেন আর নিজ হাতে জবাহ করা মোস্তাহাব । করতে না পারেন তাহলে অন্য কাউকে দিয়ে করে নিতে হবে তবে জবা করার সময় নিজের সামনে থাকা উত্তম জাবাহ করার সময় নিম্নলিখিত কাজগুলো লক্ষ রাখতে হবে ।(১) শ্বাসনালী ,(২) খাদ্যনালি , (৩)রক্ত চলাচলের নালীদ্বয় ।
বক্ষদেশ হতে গলাদেশের মধ্যে কোন স্থানে জবাহ করা বাঞ্চনীয় । জবাহের পূর্বে ছুরি ভালো করে ধারালো করে নিতে হবে । তারপর কুরবানি পশুরর মাথা দক্ষিণ দিকে এবং পেছনের দিক উত্তর দিক রেখে কেবলামুখি দুয়া পড়ে কুরবানি করতে হবে ।
কুরবানী কার উপর ওয়াজিব
ইসলামের যত বিধান আছে তার মধ্যে অন্যতম কোরবানি । কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার সন্তুষ্টি অর্জন করা যায়।কোরবান ইচ্ছে আত্মত্যাগের মহিমা, আদি পিতা হযরত আদম আলাই সাল্লাম এর দুই পুত্র হাবিল এবং কাবিল থেকে শুরু হওয়া এই কুরবানী ইতিহাস জাতির পিতা হযরত ইব্রাহিম আলাই সাল্লাম ও ও শিশু পুত্র ইসমাইল আলাই সাল্লাম এর মহান আত্মবিসর্জন যা কেয়ামত পর্যন্ত রয়ে যাবে।
স্বাভাবিক জ্ঞান সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান যদি নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন তাদের পক্ষ থেকে একটি কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক । নিসাব পরিমাণ অর্থ হলো সাড়ে ৭ ভরী স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ভরি রুপা বা নগর অর্ধবার সমপরিমাণ অর্থব্যবসার কাজে ব্যবহার করলে তাকে কুরবানী প্রদান করতে হবে । কোরবানির অর্থ হল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ।
কোরবানির পশু যে কোন নারী-পুরুষ জবাই করতে পারে। যার কোরবানি তার নিজের জবাই করা উত্তম । দোয়া না জানলেও শুধু বিসমিল্লাহি আল্লাহু আকবার বলে জবাই করলে হবে । জবাই না করতে পারলে অন্য যে কোন কাউকে দিয়ে জবাই করে নিলেই হয়ে যাবে । জবাই এর সময় নিজের থাকতে হলে ভালো জাবাহ করার জন্য কোন নিয়াত নেই ,এবং কোরবানি দাতার নাম নেওয়ার কোন জরুলি নয় ।
কুরবানির মাংস ধনী গরিব সবাই খাইতে পারে ।সুন্নাত হলো কিছু আংশ আত্নীয়স্বজনকে দিতে হবে ,এক আংশ গরীব পাড়া প্রতিবেশিদের দেওয়া এবং কিছু নিজের জন্য রেখে দিতে হবে ।যত বেশি কুরবানি মাংস দিবে তত ভালো । প্রয়জনে আপনি সম্পূর্ণটা ও রাখে দিতে পারবেন । নারী যদি নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয় তাহলে তার পক্ষে কুরবানি ওয়াজিব
কুরবানি কি ফরজ
কুরবানি করা ফরজ এ কথা কোন আলেম বলে নাই , আলেমদের মধ্যে মতবাদ রয়েছে কুরবানীর সুন্নাহ না ওয়াজিব এই বিষয় নিয়ে । একদল আলেমরা বলেছেন সুন্নতে মুয়াক্কাদা। আরেক দল ওলামারা বলেছেন কুরবানী ওয়াজিব বলেছেন । ৩-৪ জন ওলামা ছাড়া সবাই কুরবানীকে ওয়াজিব বলে ।
শরীয়তে যাদের উপর কোরবানী বাধ্যতামূলক হয় তারা হলেন মুসলমান , বিবেক সম্পূর্ণ হওয়া , প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া , কিন্তু যারা ওয়াজিব বলেছেন তারা দুটি কঠিন শর্ত দিয়েছেন একটি হচ্ছে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে । যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ হয় । তাকে মুস্তাফির হওয়া যাবে না এই দুটি শর্ত হল কুরবানীর ওয়াজিব হওয়া ।
একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন তোমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে তারা কুরবানী করো । আর যাদের সামর্থ্য থাকা শর্তেও কুরবানী করল না তারা যেন আমাদের ঈদগায়ে না আসে । রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম কখনো নিসাব পরিমাণ সম্পদের কথা বলে নাই । আসলে কুরবানী করা ফরজ নয় কুরবানী করা ওয়াজিব ।
কোরবানি কাদের ওপর ফরজ
কোরবানি আসলে ফরজ নয় , কোরবানি হচ্ছে ওয়াজিব । শরীয়তে যাদের উপর কোরবানী বাধ্যতামূলক হয় তারা হলেন মুসলমান , বিবেক সম্পূর্ণ হওয়া , প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া , কিন্তু যারা ওয়াজিব বলেছেন তারা দুটি কঠিন শর্ত দিয়েছেন একটি হচ্ছে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে ।
যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ হয় ,শরীয়তে যাদের উপর কোরবানী বাধ্যতামূলক হয় তারা হলেন মুসলমান , বিবেক সম্পূর্ণ হওয়া , প্রাপ্তবয়স্ক হওয়া , কিন্তু যারা ওয়াজিব বলেছেন তারা দুটি কঠিন শর্ত দিয়েছেন একটি হচ্ছে নিসাব পরিমাণ সম্পদের মালিক হতে হবে । যে নিসাব পরিমাণ সম্পদের ওপর যাকাত ফরজ হয় ।
কুরবানী সম্পর্কে হাদিস
কোরবানি সম্পর্কে বিভিন্ন হাদিস রয়েসে ,কিছু হাদিস সম্পর্কে আলোচনা করা হলো ।তোমরা সালাত আদায় করো ,আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করো। (সূরা কাউসার, আয়াত-২),অন্য এক হাদিসে বর্নিত আছে যে ,হযরত আবু হুরায়ারা হতে বর্নিত আছে যে ,একটি হাদিসে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাই সাল্লাম বলেন তোমাদের মধ্যে যাদের সামর্থ্য আছে তারা কুরবানী করো । আর যাদের সামর্থ্য থাকা শর্তেও কুরবানী করল না তারা যেন আমাদের ঈদগায়ে না আসে (ইবনে মাজাহ -৩১২৩)
অন্য একটি হাদিসে বলা হয়েছে "কুরবানীর পশুর রক্ত প্রবাহিত করার মাধ্যমে আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের নৈকট্য লাভ করা যায় । আল্লাহ তাআলা বলেন আমার কাছে পৌঁছে নেওয়া উপহার গোস্ত ,রক্ত , পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া (সূরা হাজ্জ, আয়াত-৩৭)।
কোরবানি ঈদ কত তারিখে ২০২৩
আগামীকাল আগামীকালও শেষ মাসের জিলহজ মাসের নতুন চাঁদ দেওয়ার সম্ভাবনা ১৯ জুন ২০২৩ তারিখে । সেদিন চাঁদ দেখা গেলে শুরু হবে জিলহজ মাসের প্রথম দিন । আর জিলহজ মাসের ১০ দিনের দিনে হবে ঈদুল আযহা অর্থাৎ কোরবানির ঈদ । এখন পর্যন্ত আশা করা যাচ্ছে যে ২০২৩ সালে কুরবানী ঈদ হবে ২৮ জুন ২০২৩ বুধবার বুধবার । আরবি মাসের ১৪৪৪ শালী জিলহজের চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে কুরবানীর ঈদ হবে ।
কুরবানির ফজিলত
আরবি কবর বা কুরবান শব্দ থেকে উর্দূ ও ফার্সিতে কোরবানি শব্দটি উৎপাত্তি ।যার অর্থ দাঁড়ায় আল্লাহর সন্তুষ্টির অর্জন করা । এক হাদিসে বলা হয়েছে "তোমরা সালাত আদায় করো ,আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য পশু কোরবানি করো। (সূরা কাউসার, আয়াত-২),
"হযরত ইবনে ওমর (রাঃ) বর্ণনা করেন, ‘রাসুলুল্লাহ (সঃ) ১০ বছর মদিনায় অবস্থান করেছেন। মদিনায় অবস্থানকালীন প্রত্যেক বছরেই কুরবানি করেছেন।’ (মুসনাদে আহমদ, তিরমিজি) হযরত আনাস (রাঃ)বলেন, রাসুলুল্লহ(সাঃ) সাল্লাম দীর্ঘ (ও সুন্দর) দুই শিং বিশিষ্ট সাদা-কালো মিশ্রিত (মেটে বা ছাই) রঙের দুইটি দুম্বা কুরবানি করেছেন।’ (বুখারি, মুসলিম) ।
রাসুলুল্লাহ (সা:) কোনো বছর কুরবানি থেকে বিতর থাকতেন না তিনি কর্মে দ্বারা যেমন কুরবানি করতে অনুপ্রাণিত করেছেন আবার বক্তব্য দিয়ে কুরবানির প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছেন। হাদিসে এসেছে-‘যে ব্যক্তি (ঈদের) নামাজের আগে (পশু) জবেহ করে সে নিজের জন্য জবেহ করে। আর যে নামাজের পর জবেহ করে তার কোরবানি সিদ্ধ হয় এবং সে মুসলমানদের তরিকার অনুসারী হয়।’ (বুখারি)
"এক হাদিসে এসেছে"রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানি করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের ধারে-কাছেও না আসে।’ (মাজাহ)"কোবানির মাধ্যামে আল্লাহ তালার সন্তুষ্টির অর্জন করা ।কোরবানি নামাজের মতো স্বতন্ত্র ইবাদত , এইটা আমাদের নবী রাসুলুল্লাহ (সঃ) এবং ইবরাহিম (আঃ) সুন্নত হাওয়ার করনে প্রিয়নবী (স:) তা নিজে পালন করতেন ।
কুরবানীর মাসায়েল
কুরবানি একট গুরুত্বপূন্য ইবাদত ।মুসলমানদের জন্য কোরবানি আদায় করা ওয়াজিব ।নবি করিম (সাঃ) বলেন ,"সামর্থ্য থাকা সত্ত্বেও যে কুরবানি করে না, সে যেন অবশ্যই আমাদের ঈদগাহের ধারে-কাছেও না আসে" । প্রতেক ইবাদতের মূল কথা হলো আল্লাহর সন্তুষ্টি আর্জন করা ।
স্বাভাবিক জ্ঞান সম্পন্ন প্রাপ্তবয়স্ক মুসলমান যদি নিসাব পরিমান সম্পদের মালিক হয়ে থাকেন তাদের পক্ষ থেকে একটি কুরবানী দেওয়া ওয়াজিব বা আবশ্যক । নিসাব পরিমাণ অর্থ হলো সাড়ে ৭ ভরী স্বর্ণ বা সাড়ে ৫২ভরি রুপা বা নগর অর্ধবার সমপরিমাণ অর্থব্যবসার কাজে ব্যবহার করলে তাকে কুরবানী প্রদান করতে হবে । কোরবানির অর্থ হল আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জন ।
নেসাবের মেয়াদ ঃ সাধারণত কুরবানী দেওয়ার জন্য যে নিসাব পরিমাণ অর্থ থাকার প্রয়োজন তা পুরো বছর জমা থাকার প্রয়োজন নেই কোরবানির আগে যে কোন সময় কাছে থাকলে ওয়াজিব হয়ে যাবে । কুরবানি দিন দিন করা যায় জিলহজ মাসের ১০-১১-১২ তারিখ সন্ধ্যা পর্যন্ত তবে জিলহজ্ব মাসির ১০ তারিখে কুরবানী করা উত্তম । নাবালক শিশু , পাগল , এবং মুসাফিরের জন্য কুরবানী ওয়াজিব নয় । দারিদ্র্য ব্যক্তির কোরবানি দেওয়া ওয়াজিব কিন্তু সে যদি কোরবানি দেওয়ার নিয়তে কোন পশু ক্রয় করে তাহলে সেই পশু কুরবানী করা ওয়াজিব ।
কেউ যদি কুরবানীর ওয়াজিব দিনে কোরবানি করতে না পারে তাহলে কুরবানির পরশু ভয় না করে থাকে তার ওপর কুরবানীর উপযুক্ত পশুর মূল্য সদকা করে দিতে হবে , কিন্তু কোন কারনে কোরবানি দেওয়া হয়নি তাহলে ওই পশুর জীবিত সদকা করে দিতে হবে । জিলহজ্ব মাসের ১০-১১-১২ তারিখ যে কোন সময় কোরবানি করা যায় কিন্তু দিনে কুরবানী করাই ভালো ।
কোরবানি করার জন্য উট, গরু , ছাগল , দুব্বা ভেড়া কুরবানি করা জায়েয ।গূহপালিত পশুছাড়া অন্য যে কোণ পশু কুরবানি করা জায়েয না । যেসব পশু কোরবানি করা জায়েয সেগুলো নর -মদ্দা উভয় কোরবানি করা যাই ।উট বয়স কমপক্ষে ৫ বছরের হতে হবে। গরু ও মহিষ বয়স কমপক্ষে ২ বছরের হতে হবে। আর ছাগল, ভেড়া ও দুম্বা বয়স কমপক্ষে ১ বছরের হতে হবে। তবে ভেড়া ও দুম্বা যদি ১ বছরের কিছু কমও হয়, কিন্তু এমন হৃষ্টপুষ্ট হয় যে, দেখতে ১ বছরের মতো মনে হয় তাহলে তা দ্বারাও কুরবানী করা জায়েয। অবশ্য এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬ মাস বয়সের হতে হবে। ছাগলের বয়স কমপক্ষে ১ বছরের কম হলে কোনো অবস্থাতেই তা দ্বারা কুরবানী জায়েয হবে না ।
শেষ কথা ঃকুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে বিস্তারিত
আজকের আর্টিকেলটি তে আলোচনা করা হয়েছে কুরবানীর মাসায়েল এবং কুরবানির ফজিলত সম্পর্কে।আজকের আর্টিকেলটি পড়ে যদি আপনাদের ভালো লাগে তাহলে আমাদের অব্যাশই কমেন্ট করে জানাবেন ।আর আপনার বন্ধুদের শেয়ার করতে কখনো ভূলবেন না । আর আমাদের ওয়েবসাইটকে ফলো করে রাখবেন ।
তৌহিদ আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url